শিরোনাম :
দেশের যৌথ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম-বৈষম্য থাকবে না’ রংপুরে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে জমির ফসল হাতিরঝিল শটগান ও ২৭ রাউন্ড কার্তুজসহ গ্রেফতার ১ নির্বাচনের ভবনের সামনে স্থানীয় সরকার দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির নেতাকর্মীরা পবিত্র ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু  কুষ্টিয়া মোটরসাইকেলে ডাম্প ট্রাকের ধাক্কা, প্রাণ গেলো দুই বন্ধুর শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ গেল ২ জনের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ প্রতিনিধি: পাল্টে যাচ্ছে সদর দক্ষিণের গ্রামীণ জনপথ কুমিল্লার টাউন হল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ পাকিস্তানের দল ঘোষণা, দলে নেই বাবর-রিজওয়ান-শাহিন বাংলাদেশের বিপক্ষে
যোগাযোগ :

ঢাকা থেকে প্রকাশিত, সরকারি মিডিয়া তালিকা ভুক্ত, জাতীয়  দৈনিক যুগযুগান্তর পত্রিকায় ও যে যে টিভি... জেলা উপজেলা, বিশেষ প্রতিনিধি, ক্রাইম রিপোর্টার, বিভাগীয় প্রধান, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি নেওয়া হচ্ছে..। আগ্রহীদের সিভি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এন আইডি কার্ড এর কপি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট মেইল অথবা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো। প্রধান কার্যালয়: ২৮, দিলকুশা বানিজ্যিক এলাকা (১৯ তম তলা), সুইট # ১৯০৩, মতিঝিল, ঢাকা - ১০০০। মোবা: 01978268378, হোয়াটসঅ্যাপ: 01612268378, ইমেইল: nskibria2012@gmail.com, শাখা অফিস : ১৮৭/২ আরামবাগ, ঢাকা। প্রধান কার্যালয়: ২৮, দিলকুশা বানিজ্যিক এলাকা (১৯ তম তলা), সুইট # ১৯০৩, মতিঝিল, ঢাকা - ১০০০। মোবা: 01978268378, হোয়াটসঅ্যাপ: 01612268378 ইমেইল: nskibria2012@gmail.com, শাখা অফিস : ১৮৭/২ আরামবাগ, ঢাকা।

নাটোরের ১৩ বছর ধরে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে আজান দেন ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ আব্দুর রহমান

নাটোরের ১৩ বছর ধরে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে আজান দেন ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ আব্দুর রহমান

নাটোরপ্রতিনিধি:
১১৫ বছর বয়স তার। নাম আব্দুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভাড়ে কাঁপা গলায় কথা বললেও মসজিদের মাইকে আজান দেওয়ার সময় সেই আজানের ধ্বনিতে খুঁজে পাওয়া যায় না তার আসল বয়সটা। লাঠিতে ভর করে হাঁটেন তিনি। লাঠির মাধ্যমে পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। গ্রামের মসজিদে গিয়ে নিয়মিত আজান দেওয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার জন্য পথ ঠিকই তৈরি করে নেন দৃষ্টিহীন আব্দুর রহমান মোল্লা। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ বেঁধে ও দড়ি টেনে নেন তিনি। এরপর তিনি বাঁশ ও দড়ি ধরে ধরে ও বেয়ে বেয়ে মসজিদে যান। মাইক চালিয়ে আজান দেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতিও করেন তিনি। এভাবেই চলছে দীর্ঘ ১৩ বছর।

মুয়াজ্জিন আব্দুর রহমান মোল্লা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামের সবচাইতে প্রবীণ ব্যক্তি। প্রায় ১৯ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় তিনি তার দুই চোখের দৃষ্টি হারান। তার পরিবারে রয়েছে দুই স্ত্রী ও ২৫ জন ছেলে-মেয়ে। তাদের মধ্যে ৬ সন্তান মারা গেছে এবং বর্তমানে তার ১০ মেয়ে, ৯ ছেলে ও দুই স্ত্রী বেঁচে রয়েছেন। সকল সন্তানদেরই প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। করিয়েছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। তাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে শিক্ষক, কৃষি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, সৈনিক, ব্যবসায়ী এবং গৃহস্থের কাজ করেন এমনও রয়েছে। অন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ২০১১ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন। হজ্ব পালন করে আসার পর নিজ গ্রামে নিজস্ব পাঁচ শতাংশ জমির ওপর তিনি তৈরি করেন একটি পাকা মসজিদ। ছেলে-নাতিন, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের মানুষদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন। ২০১১ সালেই তিনি বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ ও দড়ি টেনে নেন যাতে তা বেয়ে বেয়ে নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত করতে পারেন। তিনি তখন থেকেই ওই মসজিদের অবৈতনিক মুয়াজ্জিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

আব্দুর রহমান মোল্লা’র ছেলে শফিকুল ইসলাম সাইফুল (মাস্টার) বলেন, ২০০৫ সালে একটি দুর্ঘটনায় আমার বাবা অন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় বাবাকে চিকিৎসা করানোর পরেও বাবার চোখে আলো ফিরিয়ে আনতে পারি নাই। পরে ২০১১ সালে বাবাকে নিয়ে হজে যাই। বাবা গ্রামেই একটি মসজিদ স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বসতবাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে নিজস্ব জমিতে মসজিদ স্থাপন করার পর সেখানেই বাবা মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সেখানেই আদায় করেন। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে বাড়ি থেকে বাঁশ ও দড়ি টেনে দেওয়া হয় মসজিদ পর্যন্ত। প্রথমে প্রায় ১৫ দিন ছেলে ও নাতিরা বাঁশ ও দড়ি দেখিয়ে দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তাকে। পরে বাঁশ কিংবা দড়ি খুঁজে পাওয়ার জন্য হাতে একটি লাঠিও দেওয়া হয়।

আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম (মাস্টার) বলেন, আমার বাবার বয়স চলছে ১১৫ বছর। এই বয়সে এসেও অন্ধ হয়ে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান দেন এবং নামাজ আদায় করেন। বাবার এমন মহৎ কাজে আমরা পরিবারের সবাই অনেক খুশি। আমরা সব ভাই-বোন বাবাকে নিয়ে গর্ব করি।

দৃষ্টিহীন মুয়াজ্জিন আব্দুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক আমাকে এখনও অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক রেখেছেন। মহান আল্লাহ আমার ইচ্ছে পূরণ করেছেন’। তিনি জানান, বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যেতে তার খারাপ লাগে না। যদিও রাস্তা পারাপারের সময় ঝুঁকি থাকে তারপরও তিনি বিশ্বাস করেন আল্লাহ তাকে হেফাজতেই তার গন্তব্যে পৌঁছে দেবেন। বাকি জীবন তিনি এভাবেই ইসলামের পথে থেকেই মৃত্যুবরণ করতে চান।

নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা সাহেব জানান, আলহাজ¦ মো. আব্দুর রহমান মোল্লা ১১৫ বছর বয়সে এসে এবং অন্ধ হিসেবে প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্তে¡ও যে ভাবে তার মানসিক দৃষ্টি সচল ও মনোবল দৃঢ় রেখেছেন তাতে মহান আল্লাহ পাকের অশেষ ও বিশেষ কৃপা রয়েছে। তার এই অদ্যম শক্তি দেখে এবং তা উপলদ্ধি করে অনেকেই ইসলামী জীবন যাপনে অনুপ্রাণিত হবে নিশ্চয়ই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 jujugantor.com
Theme Customized BY SpacialNews.Com