ছাত্র-জনতার কাছে মঞ্চকর্মীদের পাঁচ প্রশ্ন

ছাত্র-জনতার কাছে মঞ্চকর্মীদের পাঁচ প্রশ্ন

বিনোদন ডেস্ক
ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পরে দেশজুড়ে দুর্বৃত্তরা জ্বালাও-পোড়াও ও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস আক্রমণ, ভাস্কর্য এবং শিল্পকর্ম ভাঙচুর, থিয়েটার দলের ওপর আঘাত এবং জ্বালাও-পোড়াও চলছে নির্বিচারে। এই প্রেক্ষাপটে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের থিয়েটারকর্মীরা। তারা মনে করেন, শিল্পী, শিল্প স্থাপনা এবং শিল্পকর্ম দেশের সম্পদ।

গণ-অভ্যুত্থানকে কেউ যেন কালিমা লিপ্ত করতে না পারে সেদিকে কড়া নজর রাখার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে মঞ্চকর্মীরা এই ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদ জানান। উল্লাস-উচ্ছ্বাস যাতে কোনো রকম প্রতিহিংসার জন্ম না দেয় সেদিকে দায়িত্বশীল নাগরিকদের সজাগ থাকতে অনুরোধ করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ দেশের আপামর জনগণের কাছে পাঁচটি প্রশ্ন রেখেছেন।

এক. শিল্প, শিল্প ও ঐতিহাসিক স্থাপনার সুরক্ষা প্রদানে চরম অরাজকতার পরেও এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? এর পেছনে কোনো নীলনকশা থাকলে তা বানচাল করা হচ্ছে না কেন?

দুই. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদানে এবং চলমান সব ধরনের সহিংসতা বন্ধে কোনো ধরনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কেন? এমন পদক্ষেপ এখন নেবে? রাষ্ট্রপতি নাকি সেনাবাহিনী?

তিন. সর্বোপরি, গণ-অভ্যুত্থান সফল করা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমাজের বিভিন্ন শ্রমজীবী ও পেশাজীবী শ্রেণি, সিভিল প্রশাসন এবং মিলিটারি প্রশাসনের সমন্বিত আলাপ ও আলোচনা শুরু না করে বঙ্গভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করার মাধ্যমে জনগণকে কি বার্তা দেওয়া হচ্ছে?

চার. বাংলাদেশ বর্তমানে কার শাসনে কোন বিধি অনুসারে চলছে? সেনাপ্রধানের, নাকি প্রেসিডেন্টের, নাকি স্পিকারের তত্ত্বাবধানে নাকি মন্ত্রিসভার অধীনে? ছাত্ররা অসহযোগের ডাক দিয়েছে। তাহলে তাদের বাদ দিয়ে আইএসপিআর কোন ক্ষমতাবলে সব কিছু খোলার ডাক দিল?

পাঁচ. গণভবন, বিভিন্ন থানাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা সুরক্ষায় পুলিশের উপস্থিতি নেই কেন? পুলিশের অবর্তমানে সেনাবাহিনী সুরক্ষা প্রদানে ব্যর্থ হলো কেন?

উল্লেখিত প্রশ্নের পাশাপাশি মঞ্চকর্মীরা বলেন, ‘আমরা যে মুখস্থ জুজুর ভয়ে কাবু ছিলাম এত দিন সেই জুজু যেন আমাদের শিল্পী, শিল্প স্থাপনা, সংখ্যালঘু ভাই-বোন এবং পরিবারগুলোকে ভীত, সন্ত্রস্ত এবং আস্থাহীন না করে তোলে তার আবেদন জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট সব মহলের কাছে। অতি দ্রুত দেশের জনগণের সুরক্ষা এবং সহিংসতা বন্ধের জন্যও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’

আয়োজনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বটতলার নাট্যকর্মী ও নির্দেশক কাজী রোকসানা রুমা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ, প্রাচ্যনাটের দল প্রধান ও নির্দেশক আজাদ আবুল কালাম, অভিনেতা কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার, আলোক নির্দেশক ঠান্ডু রায়হান, অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকি, নির্মাতা রেদওয়ান রনি, অভিনেতা-নির্দেশক মোহাম্মদ বারী, সংগীতশিল্পী অভিনেতা সাইফুল ইসলাম জার্নাল, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষক মানামী তানজানা অর্থিসহ আরও অনেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 jujugantor.com
Theme Customized BY SpacialNews.Com