নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত দুইদিনে ৫৯ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে গত ১৫ বছরে নিয়োগ না পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের দাবি, গত দুই দিনে ডিসি নিয়োগ দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে।
গত সোমবার ২৫ জেলায় আর মঙ্গলবার ৩৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার দুপুরে প্রজ্ঞাপন জারির পর বঞ্চিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভিড় করতে থাকেন। এই কর্মকর্তাদের দাবি, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাদের পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা বিএনপিপন্থি বলে পরিচিত।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা দাবি করেন, ডিসি হিসেবে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী। বিগত সরকারের প্রতি অনুগত থাকায় তারা সব সময়ই ভালো জায়গায় পদায়ন পেয়েছেন।
নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল চেয়ে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও কে এম আলী আযমের কক্ষে যান। বিএনপিপন্থি হিসেবে পরিচিত এই দুই কর্মকর্তা সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন পেয়েছেন।
এ সময় বিক্ষুব্ধরা এই দুই কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, কীভাবে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা ডিসি নিয়োগ পেলেন? এ সময় দুই কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
পরে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ওই দুই যুগ্ম সচিবসহ ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মকর্তা মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের কক্ষে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তারা বের হয়ে আসেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর একজন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানিয়েছি। কেন বাতিল করতে হবে, সেটাও তুলে ধরেছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, তিনি আমাদের দাবি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তুলে ধরবেন। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।’
প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, ডিসি ফিটলিস্ট করার সময় বলা হয় মাঠ প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি), ইউএনও, এসিল্যান্ড পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু ডিসি নিয়োগ পেয়েছেন এমন অনেকের মাঠ প্রশাসনে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন পদে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে।
Leave a Reply