নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি,
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ্ আল মামুনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় একটি বাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই এলাকার আব্দুল রহিমের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার পথে শিমরাইল এলাকায় একটি বাস থেকে গতকাল রাত দেড়টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অবস্থিত র্যাব-১১ মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুড়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গত ২২ দিনে ত্বকী হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক মো. জামশেদসহ ৬ ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর মধ্যে আজমেরী ওসমানের সহযোগী কাজল হাওলাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য দুই আসামি শাফায়েত হোসেন (শিপন) ও মামুন মিয়াকে দুই দফায় ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গাড়িচালক জামশেদকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইয়ার মোহাম্মদ কারাগারে আছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, আগে ত্বকী হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা–পুলিশ। উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার র্যাব-১১ এর কাছে অর্পণ করা হয়। ত্বকী হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততা প্রাপ্তি সাপেক্ষে সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে জামাই মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নেওয়া হয়। ৬ অক্টোবর আসামির রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, ত্বকী হত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাঁদের টর্চার সেলে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেন। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সেই অভিযোগপত্র আজও দেওয়া হয়নি।
Leave a Reply