চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরে ব্যবসায়ী রেহানউদ্দিন মিজি হত্যায় জড়িত সন্দেহের তীর বাসার দারোয়ানের সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে রহস্যময় এক নারী। ওই নারীর সঙ্গে নিহতের ঘনিষ্ঠতা ছিল। পুলিশ এখন এই নারীকে হন্যে হয়ে খুঁজছে।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতের স্ত্রী পারভিন আক্তার শুক্রবার (২৫ জুন) সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে এতে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে অভিযুক্ত করেননি তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, ঘটনাস্থলে ক্রাইসসিনের আলামতের সূত্র ধরে হত্যাকারীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), সিআইডি এবং পিবিআই পুলিশের এই চারটি ইউনিট পৃথকভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার আশা করছেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে রেহানউদ্দিন মিজি হত্যায় জড়িতদের পুলিশ আটক করতে সক্ষম হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের খান সড়কের একটি ভাড়া বাসা থেকে ব্যবসায়ী রেহানউদ্দিন মিজির রক্তাক্ত লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। ঘটনার তিন দিন আগে স্ত্রী বেড়াতে গেলে ওই সময় বাসায় তিনি একাই ছিলেন।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রেহানউদ্দিন মিজির তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। একমাত্র ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। তামান্না শারমিন ভিলা নামে ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় স্ত্রী পারভিন আক্তারকে নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন একসঙ্গে থাকলেও স্ত্রী মাঝে মধ্যে বেড়াতে যেতেন। আর এই সুযোগে সেখানে অন্য এক নারী এসে রেহানউদ্দিন মিজির সঙ্গে সময় কাটাতেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় হয়তো ক্ষুব্ধ হয়ে তার হাতে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া বাড়ির দারোয়ান হারুন মিয়া এবং ব্যবসা সংক্রান্ত অন্য কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল কী না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে। তবে ঘটনার পর থেকে বাসার দারোয়ান এবং ওই নারী অধরা। তাদেরকে ধরতে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।
এদিকে, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায় পুলিশের চারটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। এসময় ক্রাইম সিন থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তামান্না শারমিন ভিলা নামে এই বাড়ির মালিক তার স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশ থাকেন। বাড়িটি ওই প্রবাসীর শ্বশুর তোফাজ্জল হোসেন পাটোয়ারী দেখাশোনা করেন। কোনো এক ঘটনায় গত কিছুদিন আগে বাড়ির দারোয়ান হারুন মিয়াকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি।
স্ত্রী পারভিন আক্তার ছাড়াও এক ছেলে এবং তিন মেয়ের বাবা রেহানউদ্দিন মিজি। তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার দক্ষিণ তারাবুনিয়া গ্রামে। তিনি ড্রেজারের বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বছর দেড়েক আগে চাঁদপুর শহরের খান সড়ক এলাকার তামান্না শারমিন ভিলা নামে এই বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে উঠেন তিনি। চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে রেহানউদ্দিন মিজিকে দাফন করা হয়।
Leave a Reply