নিজস্ব প্রতিবেদক:
খাদ্যের সম্ভাব্য ঘাটতি পূরণের জন্য বেশি করে চাল আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া গতবারের তুলনায় এবার এক থেকে দুই টাকা বেশি দরে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান-চাল সংগ্রহের প্রস্তাব করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বাড়তি চাল আমদানি ও ধান-চালের মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) বৈঠক হওয়ার কথা।
এই বৈঠকে চাল আমদানি ও দাম বাড়ানোর প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করা হবে। একই সঙ্গে আমন ফসল থেকে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে এফপিএমসি। এ ছাড়া বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা মজুদ পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিটি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
১০ লাখ টন চাল আমদানির প্রস্তাব : খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে বন্যায় খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ায় তিন লাখ টন বাড়িয়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করতে চায় সরকার। এ ছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টন চাল এবং দুই লাখ টন ধান সংগ্রহের প্রস্তাব রয়েছে। খাদ্যশস্যের ঘাটতি মেটাতে সংগ্রহ ও আমদানির এই বড় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতকেও চাল আমদানির জন্য উৎসাহ প্রদান করা হবে।
ধান-চালের দাম বাড়তে পারে কেজিপ্রতি ১-২ টাকা : এদিকে দেশে ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য এক থেকে দুই টাকা বাড়াতে পারে সরকার। সর্বশেষ বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩২ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৫ টাকা, আতপ চাল ৪৪ টাকা এবং গম ৩৪ টাকা। ২০২৩ সালে ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য ছিল যথাক্রমে ধান ৩০ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা এবং গম ৩৫ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান যুগ-যুগান্তরকে বলেন, ‘বন্যার কারণে এবার চাল উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।
চালের মজুদ বৃদ্ধির বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ধান-চাল সংগ্রহ ও আমদানির বিষয়ে এফপিএমসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
ধান উৎপাদনের খরচও এবার বেড়েছে। সে অনুযায়ী সরকার সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করবে। কৃষিসচিব বলেন, কৃষক ও ক্রেতা উভয়ের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি খাদ্যের নিরাপত্তা মজুদও ঠিক রাখতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান যুগ-যুগান্তরকে বলেন, ‘এবার যেহেতু বন্যায় খাদ্যশস্যের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই চাল আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব করা হবে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে সে অনুযায়ী চাল ক্রয় করব আমরা।’
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে সরকার। তাই ধান, চাল ও গমের সংগ্রহ মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে। এ বছর খাদ্যশস্যের দাম না বাড়ালে কৃষক ও মিল মালিকদের লোকসান হবে। এতে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণও কঠিন হতে পারে।
Leave a Reply