নিজস্ব প্রতিবেদক
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্বোধন ঘোষণার মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার। এবার প্রথমবারের মতো মেলায় প্রবেশ করতে দর্শনার্থীদের জন্য ‘ই-টিকেটিংয়ের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে শুরু হওয়া মেলায় প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ফি বাড়েনি।
মেলায় প্রবেশে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবারও টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা, যা আগের বছরও একই ছিল। শিশুদের জন্যও (১২ বছরের নিচে) আগেরবারের মতো ২৫ টাকা থাকছে টিকিটের মূল্য। তবে কার্ড দেখানো সাপেক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার কিছু আগে রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এটি চলবে মাসব্যাপী।
দেশে পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় মেলাটি প্রতিবছরের শুরুর দিন উদ্বোধন করা হয়। বছর কয়েক থেকে এটি হচ্ছে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি)। মাসব্যাপী মেলাটি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
প্রথমবারের মতো ‘ই-টিকেটিং’
প্রথমবারের মতো মেলায় প্রবেশ করতে দর্শনার্থীদের জন্য ‘ই-টিকেটিংয়ের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্মার্ট মোবাইল ফোনে ই-টিকিটের ইমেজ ও ভিসিবল ডিজিটাল সাইন (ভিডিএস) নামে পরিচিত কিউ আর কোড প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গেই স্ক্যানারের কল্যাণে যাবতীয় তথ্য পৌঁছে যায় ই-গেটে। আর তথ্যপ্রাপ্তির কল্যাণে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য খুলে যাবে এই গেট। একজন দর্শনার্থী প্রবেশের পর আবারও স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ গেট বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তী দর্শনার্থী প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
এভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনেক দর্শনার্থী মেলায় প্রবেশের সুযোগ পাবেন। সাধারণভাবে ই-গেটে লাল বাতি জ্বালানো থাকবে এবং সঠিক টিকেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে সবুজ বাতি জ্বলবে এবং ই-গেট খুলে যাবে।
এই সিস্টেম চালু করায় মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ঘরে বসেই মোবাইল টেলিফোন নির্ভর যেকোনো আর্থিক লেনদেনের সুবিধা কিংবা দেশের স্বনামধন্য বেশ কিছু ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সহজেই টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন এবং তাদের মোবাইলে তা সংরক্ষিত থাকবে।
মেলায় প্রবেশের সময় মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত এই টিকিটের ইমেজ প্রদর্শন করে একজন ব্যক্তি বা টিকিটে উল্লিখিত সংখ্যক দর্শনার্থী সহজেই মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। এতে মেলায় প্রবেশের জন্য মেলা প্রাঙ্গণের সামনে স্থাপিত টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিড়ম্বনা থেকে দর্শকরা মুক্তি পাবেন। একইসঙ্গে কাগজ ও ছাপার খরচ পরিহার করে দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবেন।
যাত্রীবহনে থাকবে বিআরটিসির দুই শতাধিক বাস, উবারে ৫০ শতাংশ ছাড়
পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ বছর বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।
উবারের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ ছাড়ে মেলায় যাত্রী পরিবহন করা হবে। এছাড়া মেলায় যেতে প্রতিবছরের মতো বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিস থাকবে।
কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট (খেজুর বাগান/খামার বাড়ী), নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বাণিজ্যমেলার উদ্দেশ্যে বিআরটিসির ২০০টির বেশি ডেডিকেটেড শাটল বাস চলবে। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ থেকে একই গন্তব্যে শাটল বাসের সর্বশেষ ট্রিপ ছাড়বে রাত ১১টায়।
ফার্মগেট (খেজুর বাগান/খামার বাড়ী) টু মেলা প্রাঙ্গণ ভাড়া ৭০ টাকা, কুড়িল বিশ্বরোড টু মেলা প্রাঙ্গণ ভাড়া ৩৫ টাকা, নারায়ণগঞ্জ টু মেলা প্রাঙ্গণ ভাড়া ১২০ টাকা, নরসিংদী টু মেলা প্রাঙ্গণ ভাড়া ৯০ টাকা, মেলা প্রাঙ্গণ টু গুলিস্তান ভাড়া ৮০ টাকা এবং গুলিস্তান টু নারায়ণগঞ্জ ভাড়া ৪৫ টাকা (জনপ্রতি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
Leave a Reply